আক্কেলপুর উপজেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য:
জয়পুরহাট গোপীনাথপুর মন্দির ছবি জয়পুরহাট জেলার
আক্কেলপুর উপজেলা সদর হতে মাত্র ৬/৭ কিঃ মিঃ পূর্বে গোপীনাথপুরে একটি অতি
প্রাচীন মন্দির রয়েছে । এটি গোপীনাথ ঠাকুরের মন্দির নামে পরিচিত । যতদূর
জানা যায় আজ হতে পাঁচশত বছর পূর্বে ভারতের নদীয়া জেলার শান্তিপুরে প্রভুপাদ
অদ্বৈত গোস্বামী সবসময় ঈশ্বরের ধ্যান করতেন । তার স্ত্রী সীতা দেবীও ছিলেন
সতী-সাধ্বী নারী । একদিন ২৪ পরগণার যুবক নন্দ কুমার এবং নদীয়া জেলার আর এক
যুবক যজ্ঞেশ্বর রায় প্রভুপাদ অদ্বৈত গোস্বামীর নিকটে এসে দীক্ষা গ্রহণ
করতে চাইলে অদ্বৈত গোস্বামী মহোদয় সব কথা শুনে তাদেরকে সীতাদেবীর কাছে
পাঠান । সীতাদেবী ধ্যান যোগে জানতে পারেন যে, এই যুবকেরা পূর্ব জম্মে জয়া ও
বিজয়া নামে দুই সখী ছিল। তখন সীতাদেবী যুবকদের মাথা ন্যাড়া করে স্নান করে
আসতে বলেন । সীতাদেবীর নির্দেশ মত কাজ শেষ করে এলে তিনি তাদের দীক্ষা দেন।
সীতাদেবী নন্দকুমারের নাম নন্দিনী এবং যজ্ঞেশ্বরের নাম জংগলী রাখলেন।
নন্দিনী প্রিয়া বরেন্দ্র এলাকায় বর্তমান জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার
গোপীনাথপুর গ্রামের ১কিঃমিঃ উত্তরে গভীর জঙ্গলে নদীর ধারে একটি মন্দির
স্থাপন করেন । জনশ্রুতি আছে যে, ১৫২০ হতে ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুলতান
আলাউদ্দীন হুসেন শাহ নন্দিনী প্রিয়ার পূজা-পার্বণ ও অতিথি সেবার কথা শুনে
খুশি হয়ে তাম্রফলকে লিখে পূর্ণগোপীনাথপুর ও গোপালপুর মৌজার সব সম্পত্তি
দেবোত্তর হিসেবে প্রদান করেন । এরপর পূর্ণ গোপীনাথপুর মন্দিরটি নির্মিত হয় ।
পাল যুগের নির্মাণ কৌশল অনুসারে এ মন্দিরটির কাঠামো নির্মিত হয় । বাংলা
১৩০৪ সালে এক ভূমিকম্পে এ মন্দিরটি ভেঙ্গে পড়ে। ১৯২৮ হতে ১৯৩৬
খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বর্তমান মূল মন্দিরটি পুনরায় নির্মাণ করা হয় । এখনও
পুরাতন কারুকার্যের কিছু নমুনা মূল ভবনে রয়েছে। মন্দিরটির উচ্চতা ৫০ ফুট।
এখানে প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় আরতি এবং মধ্যাহ্নে আধামণ চালের অন্নভোগ
দেওয়া হয় । প্রতিবছর দোল পূর্ণিমাতে এখানে মেলা বসে এবং ১৩দিন ধরে এ মেলা
চলে । দূর দূরান্ত থেকে ভ্রমণ বিলাসী ও সৌন্দর্য পিপাসু ব্যক্তিবর্গ এখানে
প্রতিনিয়ত আগমন করে। তাই পিকনিক স্পট হিসেবেও স্থানটি খ্যাতি লাভ করেছে।
গোপীনাথপুর মন্দির, আক্কেলপুর, জয়পুরহাট বার শিবালয় মন্দির ছবি জয়পুরহাট
সদর থেকে তিন মাইল উত্তর পশ্চিমে ছোট যমুনা নদীর তীরে বেল-আমলা গ্রামে এই
মন্দিরটি অবস্থিত। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা নিভৃত স্থানে বারটি
শিবমন্দির রয়েছে । মন্দিরগুলি কোন যুগে এবং কার দ্বারা নির্মিত তা সঠিকভাবে
জানা যায়নি। তবে মন্দিরের গঠন প্রণালী ও নির্মাণশৈলী দেখে ধারণা করা হয়
এগুলি সেন যুগে নির্মিত । কারণ সেন রাজা বল্লভ সেন ছিলেন শিবের উপাসক তথা
শৈব। এতদঞ্চলে সেন রাজাদের আরও কিছু কীর্তি রয়েছে ।
অতি প্রাচীন মন্দির গোপীনাথ ঠাকুরের মন্দির |
উপজেলার বর্তমান ইতিহাস:
বৃহত্তম বগুড়া জেলার আদমদীঘি থানার কিছু অংশ
নিয়ে স্বাধীনতার পর বিগত ১৯৭২ সালে প্রথমে আক্কেলপুর থানা হিসাবে প্রকাশিত
হয়। তখন আক্কেলপুর রেল গেটের নিকট স্থানীয় ব্যবসায়ী ফজর উদ্দিন আকন্দ
সাহেবের ভাড়া বাসায় প্রথমে পুলিশ স্টেশন চালু হয়। পরবর্তীতে বিগত ১৯৮৪ সালে
এরশাদ সরকারের আমলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসাবে আক্কেলপুর
উপজেলায় উন্নীত হয়। সেই সময় তুলসীগঙ্গা নদীর পশ্চিম পাড় প্রায় ৯ একর জায়গা
জুড়ে এর প্রশাসনিক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়। উল্লেখ্য ব্রিটিশ আমল থেকেই রেল
যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় আক্কেলপুর ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য বিশেষ করে সবজির
জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করে। সম্প্রতি দেশের সব চেয়ে বেশি পোলট্রি শিল্প
আক্কেলপুর উপজেলায় গড়ে উঠেছে। দেশের রাজধানী সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ
এলাকার সাথে আক্কেলপুরের চমৎকার রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। উপরন্তু
বর্ষাকালে নদী পথে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহন করা যায়। এ উপজেলার প্রতি
বর্গ কিমি এ ৯০৪ জন লোক বাস ক |
No comments:
Post a Comment